Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

সবরকান্থায় সবর ডেয়ারির বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বাংলা অনুবাদ

সবরকান্থায় সবর ডেয়ারির বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বাংলা অনুবাদ


ভারতমাতা কি – জয়, ভারতমাতা কি – জয়,

জনপ্রিয় ও মৃদুভাষী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল, সংসদে আমার বর্ষীয়ান সহকর্মী ও গুজরাট ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শ্রী সি আর পাটিল, গুজরাট বিধানসভার উপাধ্যক্ষ শ্রী জেঠভাই, মন্ত্রীগণ এবং গুজরাট সরকারের সব বিধায়ক ও এই অঞ্চলের সাংসদ এবং সবর ডেয়ারীর সঙ্গে যুক্ত অফিস কর্মী, কৃষক বন্ধু ও পশুপালনের সঙ্গে যুক্ত ভাই ও বোনেরা!

আজ সবর ডেয়ারী প্রকল্প আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। বহু কোটি টাকা মূল্যের নতুন প্রকল্প চালু হচ্ছে এখানে। এর ফলে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে গুঁড়ো দুধ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে। নতুন যে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর আজ স্থাপন করা হয়েছে, তা সবর ডেয়ারির ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে। আমি সবর ডেয়ারী এবং এই সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত সব কৃষক ভাই ও বোনদের অভিনন্দন জানাই।

সবর ডেয়ারির কথা যখন উঠে আসে, তখন স্বাভাবিকভাবে মনে পড়ে, ভুড়াভাইয়ের কথা। বেশ কিছু দশক আগে ভুড়াভাই প্যাটেলের এই উদ্যোগ লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সাহায্য করেছে। সবরকান্থার এমন কোনও অঞ্চল নেই, যেখানে আমি যাইনি। সবরকান্থার সবকিছুই আমার কাছে পরিচিত। কেউ যদি বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকেন, তা হলে তিনি শুনতে পান – ক্ষীর ক্ষীর ক্ষীর বলে বিক্রেতার চিৎকার। আমি যখনই সবরকান্থায় আসি, এই শব্দগুলি আমার কানে বাজতে থাকে। মনে পড়ে, অনেক বন্ধুর কথা। আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু ইতিমধ্যেই প্রয়াত। এটি অত্যন্ত দুঃখের। আমি শ্রীরাম সাঙ্খলা, জয়েন্দ্র সিং ভাই রাঠোর, এস এম খান্দ, ধীমন্ত প্যাটেল, আমার ভাই গজানন্দ প্রজাপতি, বিনোদ খিলজীভাইকে স্মরণ করছি। এছাড়াও, আমার অনেক পুরনো বন্ধুর কথা ও তাঁদের মুখ আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আমার অনেক পরিবার-পরিজনের স্মৃতি আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। বিশেষ করে বলতে হয়, দয়াভাই ভাট, মূলতজীভাই পারমারের মতো প্রবীণ বন্ধুদের কথা। আমি তাঁদের অনেকের সঙ্গেই কাজ করেছি। কিন্তু, এখন আপনারা আমায় যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালন করে আমি কেবল আমার পুরনো দিনের কথাই মনে করতে পারি।

বন্ধুগণ,

আপনারা সকলেই দু’দশক আগে এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। গুজরাটের অনেকাংশে অতিবৃষ্টির সমস্যার সম্মুখীন আমরা। ভারী বৃষ্টি এখানকার মানুষকে আবেগাপ্লুত করে। ৫-১০ বছর ধরে এখানে খরা থাকতো, মানুষ বৃষ্টির জন্য হাহাকার করতেন। কৃষিকাজ সম্ভব হ’ত না। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে। জলসেচ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। আমরা কৃষি, পশুপালন ও দুগ্ধ প্রকল্পকে অনেক উন্নত করেছি। দুগ্ধ প্রকল্পগুলি অর্থনীক্তির স্থিতাবস্থা আনার পাশাপাশি, কাজের নতুন সুযোগ করে দিচ্ছে। আমি আমার কৃষক বন্ধুদের যখন এই ব্যবস্থা থেকে তাঁদের লাভের বিষয়ে জানতে চাই, তখন তাঁরা জানান, এখান থেকে তাঁরা সোনা কেনার মতো লাভ করতে পারেন।

বন্ধুগণ,

গুজরাট এমন একটি রাজ্য, যেখানে বহু বছর আগেই আমরা পশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা চালু করেছিলাম। এমনকি, পশুর দাঁতের চিকিৎসাও করা হয়। প্লাস্টিক আমাদের পশুদের জন্য বড় শত্রু। তাই, এর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। আজ আমার বোনেরা আমায় জানিয়েছেন, বর্তমানে আয়ুর্বেদিক ওষুধের সাহায্যে পশু চিকিৎসা করা হয়। এই ব্যবস্থার সাহায্যে যাঁরা পশু চিকিৎসা করছেন, আমি তাঁদের সকলকে অভিনন্দন জানাই।

আমি যখন ২০০১ সালে এখানকার দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন জনগণ আমাকে তাঁদের নৈশাহারের সময় বিদ্যুৎ প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এই সময় সন্ধ্যাবেলায় গুজরাটে বিদ্যুৎ থাকতো না। আমরা তথন জ্যোতি গ্রাম যোজনার প্রচার শুরু করি। বর্তমানে এই প্রকল্প গুজরাটের বাড়িগুলিতে কেবলমাত্র আলো এনে দিয়েছে তা নয়, টিভিও চলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, শিশুদের জন্য দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্রে কাজ চালানো সম্ভব হয়। বর্তমানে গুজরাটের ডেয়ারী বাজারের পরিমাণ ১ লক্ষ কোটিতে পৌঁছেছে।

বন্ধুগণ,

২০০৭ ও ২০১১ সালে আমি যখন ক্ষমতায় আসি, তখন ডেয়ারী ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়। আমি এতে মহিলাদের বেশি করে অংশগ্রহণের কথা বলি। বর্তমানে গুজরাটের আমার অনেক বোনেরাই এই দুগ্ধজাত প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে গুজরাটে কেবলমাত্র মহিলারা দুধের দাম পান। এর ফলে, আমার মা ও বোনদের ক্ষমতায়ন হয়েছে।

গুজরাটে সমবায় সংস্কৃতির একটি উন্নত সংস্কৃতি রয়েছে। কৃষি কাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের পাশাপাশি, দুগ্ধ সমবায় আন্দোলনের ক্ষেত্রেও আমরা সাফল্য পাচ্ছি। এ থেকে আমার কৃষক ভাই ও বোনেরা উপকৃত হচ্ছেন।

ভাই ও বোনেরা,

গত আট বছরে কেন্দ্রীয় সরকার গুজরাট সহ দেশের বিভিন্ন অংশে কৃষকদের আয় বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে। উদ্যান পালন, পশুপালন, মৎস্যচাষ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কৃষকদের আয় বেড়েছে। এমনকি, ভূমিহীন কৃষকরাও তাঁদের আয় বাড়াতে পা্রছেন।

দেশে বর্তমানে খাদি ও গ্রামীণ শিল্প ক্ষেত্রে ভালো লাভ পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রথমবার এই শিল্প থেকে আয়ের পরিমাণ ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত আট বছরে দেশের বিভিন্ন গ্রামে দেড় কোটিরও বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। পাশাপাশি, গত আট বছরে মধু উৎপাদনও কয়েক গুণ বেড়েছে।

এমনকি, পেট্রোলে ইথানল মেশানোর কাজও ১০ শতাংশ বেড়েছে। ইথানল কি করে তৈরি হয়? এটি আখ ও ভুট্টা থেকে তৈরি হয়। এর ফলে, আমাদের সম্পদ বৃদ্ধির পাশাপাশি, পরিবেশ রক্ষাতেও কাজ করছে। এই প্রথম কৃষক ও মৎস্যচাষের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে।

ভাই ও বোনেরা,

আমরা দেশে ক্রমাগত উন্নত সার ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি কাজে খরচ কমাতে চাইছি। এক্ষেত্রে ন্যানো সার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গত কয়েক মাসে বিশ্বে ইউরিয়ার দাম অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু, আমরা কৃষকদের উপর এই বোঝা চাপাইনি। ভারত সরকার নিজে এই বোঝা বহন করছে। ৫০ কেজি ওজনের প্রতি ব্যাগ ইউরিয়ার দাম সরকারের পড়ে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। কত? হ্যাঁ, ৩ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে নেয় মাত্র ৩০০ টাকা! বর্তমানে বিশ্বে ইউরিয়ার দাম বাড়ায় সরকারকে এই বোঝা বহন করতে হলেও আমরা আমাদের কৃষকদের এ থেকে মুক্ত রেখেছি।

বন্ধুগণ,

গুজরাটের কৃষকরাও কিন্তু সব প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। আরাবল্লির ৫০ হাজারেরও বেশি কৃষক ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এ বিষয়ে আমি আরাবল্লির কৃষক ভাইদের বিশেষ অভিনন্দন জানাই। ‘হর ঘর জল অভিযান’-এর আওতায় সকলের জলের চাহিদা মেটাতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে।

বন্ধুগণ,

আজ সবরকান্থার পরিকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপকভাবে। এর চারপাশে বিস্তৃত রেললাইন, প্রশস্ত সড়কপথ এবং বিভিন্ন রেলসেতু যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করছে।

বন্ধুগণ,

যখন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পরিকাঠামোর মানোন্নয়ন হয়, তখন পর্যটন ক্ষেত্রও বিশেষভাবে উপকৃত হয়। কাজের সুযোগ পান তরুণরা। সবরকান্থা ও বনসকান্থা হ’ল এমন এক অঞ্চল, যেখানে বিশ্বাস, আদিবাসী ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সৌন্দর্য মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। শামলাজী মন্দিরের পুনর্নির্মাণ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এর ফলে, এখানে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে, জীবনযাত্রার মানোন্নয়নও হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অমৃত মহোৎসব পালনকালে আমি সবরকান্থায় এসেছি। আদিবাসী নায়ক মতিলাল তেজাওয়াতজীর নেতৃত্বে এখানকার আদিবাসী সম্প্রদায় ১০০ বছর আগে বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিতেছিলেন। স্বাধীনতার পর দুর্ভাগ্যবশত মানুষ সেই ঘটনা ভুলে যান। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে আদিবাসী মানুষের সেই আত্মবলিদানের কথা তুলে ধরার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। আমরা সফলভাবে পালচিতারিয়া শহীদ স্মারকের সংস্কার করেছি। বর্তমানে শহীদ স্মৃতি বন আগামী প্রজন্মকে আত্মত্যাগের সেই পথ প্রদর্শন করে।

আমরা ১৫ নভেম্বর ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মদিনটিকে জনজাতীয় গৌরব দিবস হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সরকার সারা দেশে আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতিতে বিশেষ সংগ্রহশালা নির্মাণ করছে।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আরও একটি বিশেষ ঘটনা হ’ল – এই প্রথমবার আদিবাসী সমাজের এক মেয়ে দেশের সাংবিধানিক সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছেন। দেশ শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছে। ১৩০ কোটি ভারতবাসীর জন্য এ এক গর্বের মুহূর্ত।

বন্ধুগণ,

আজ আমি গুজরাটের জনগণ ও দেশবাসীর কাছে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানাই। এই কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রত্যেক বাড়িতে ১৩ অগাস্ট থেকে আমাদের ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। দেশের স্বাধীনতার জন্য যাঁরা নিজেদের উৎসর্গ করেছেন, তাঁরা আপনার বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন দেখে আপনাকে আশীর্বাদ করবেন।

আপনাদের আশীর্বাদে গুজরাট আমায় যে মূল্যবোধ শিখিয়েছে, তা সঙ্গে নিয়ে দেশের জনগণের উন্নতির জন্য আমি কাজ করে যাই। ভারতের প্রত্যেক গ্রামে আমাদের উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছক। আপনাদের আশীর্বাদ আমার কাছে বড় সম্পদ। আপনারা দু’হাত তুলুন এবং আমার সঙ্গে উচ্চস্বরে বলুন,

ভারতমাতা কি জয়!

ভারতমাতা কি জয়!

ভারতমাতা কি জয়!

ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল

PG/PM/SB