নয়াদিল্লি, ২৯ জুলাই, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৩০ জুলাই বেলা ১২.৩০ মিনিটে ‘উজ্জ্বল ভারত উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ- পাওয়ার@২০৪৭’ কর্মসূচির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে আয়োজিত গ্র্যান্ড ফিনালেতে অংশগ্রহণ করবেন। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের পুনর্গঠিত বন্টন ব্যবস্থা প্রকল্পের সূচনা করবেন। তিনি এনটিপিসি-র বিভিন্ন পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসও করবেন। এছাড়াও শ্রী মোদী বাড়ির ছাদে সৌরশক্তি উৎপাদন সংক্রান্ত একটি জাতীয় পোর্টালের সূচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের জন্য একগুচ্ছ যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই সংস্কারগুলির ফলে সকলে যাতে ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পেতে পারে সেটি নিশ্চিত হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎকে পৌঁছে দিতে সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে, এই গ্রামগুলিতে এতো বছর বিদ্যুতের সংযোগ পৌঁছায়নি।
এক ঐতিহাসিক উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা এবং বিদ্যুৎ দপ্তরের পরিচালনগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার উদ্দেশ্যে যে প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছে তার অঙ্গ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ মন্ত্রকের একটি ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচির সূচনা করবেন। ২০২১-২২ থেকে ২০২৫-২৬ সময়কাল পর্যন্ত ৫ বছর ধরে প্রকল্পটির জন্য ব্যয় হবে ৩ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলির আধুনিকীকরণ এবং বন্টন পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করা, উপভোক্তার কাছে যথাযথ গুণমানসম্পন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া এবং ভরসাযোগ্য পরিষেবা নিশ্চিত করাই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এর ফলে দেশজুড়ে কারিগরি ও বাণিজ্যিক ক্ষতির পরিমান কমিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। বর্তমানে ১২-১৫ শতাংশ হারে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির কারিগরি ও বাণিজ্যিক কারনে ক্ষতি হয়। এই ক্ষতির পরিমান কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মধ্যে সব রাজ্যের বন্টন সংস্থা এবং বিদ্যুৎ দপ্তরগুলির পরিচালনগত দক্ষতা ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার ফলে বিদ্যুৎ বন্টনের সময় যে ব্যয় হয় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের কারনে যে রাজস্ব আদায় হয় তার পার্থক্যের পরিমান শূন্যতে নিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এদিনের কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা বেশি মূল্যের এনটিপিসি-র বিভিন্ন পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। তিনি তেলেঙ্গানায় রামাগুন্ডামে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ভাসমান সৌর প্রকল্প ও কেরালায় কায়ামকুলাম ৯২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন আর একটি ভাসমান সৌর প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও তিনি রাজস্থানে ৭৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন নখ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প, লেহ-তে পরিবেশ বান্ধব হাইড্রোজেন প্রকল্প এবং গুজরাটে কাওয়াস পরিবেশ বান্ধব হাইড্রোজেন ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মধ্যে মিশ্রনের একটি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন।
ভারতের বৃহত্তম ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প- রামাগুন্ডম প্রকল্পটিতে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ বা দেশে তৈরি সাড়ে ৪ লক্ষ সৌর ফটোভোল্টিক মডিউলের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। কায়ামকুলাম প্রকল্পটি দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাসমান সৌর প্রকল্প। এখানে ৩ লক্ষ মডিউলের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
রাজস্থানের জয়সলমীরের নখে দেশের বৃহত্তম চাহিদা ভিত্তিক সৌর প্রকল্প। এখানে একটি জায়গা থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। একাজে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফটোভোল্টিক মডিউল বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। পরিবেশ বান্ধব হাইড্রোজেন প্রকল্পটি একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথম বিশেষ ধরনের জ্বালানী সেলের সাহায্যে বৈদ্যুতিক বাস চলবে। লেহ শহরে এ ধরণের ৫টি বাস চালানো হবে। এনটিপিসি-র কাওয়াস টাউনশিপে ভারতের প্রথম পরিবেশ বান্ধব হাইড্রোজেন মিশ্রিত গ্যাস প্রকল্প প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমাতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী বাড়ির ছাদে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন সংক্রান্ত ন্যাশনাল সোলার রুফ টপ পোর্টালের সূচনা করবেন। এই পোর্টালের সাহায্যে বাড়ির ছাদে সৌরশক্তি উৎপাদনের জন্য আবেদন জমা দেওয়া, সেই আবেদনের নথিভুক্তিকরণ এবং যে বাড়িগুলি শুধুমাত্র বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হয় সেখানে এ ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হলে তার জন্য প্রয়োজনীয় ভর্তুকি লাভ সংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে।
আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসেবে ২৫-৩০ জুলাই দেশজুড়ে ‘উজ্জ্বল ভারত উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ- পাওয়ার@২০৪৭’ পালন করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে গত ৮ বছরে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্কার কার্যকর হওয়ার পর কি কি পরিবর্তন হয়েছে তার প্রচার করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করে তোলা এবং যুক্ত করা এই কর্মসূচীর উদ্দেশ্য।
PG/CB/NS