Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী পুণের দেহুতে জগৎগুরু শ্রীসন্ত তুকারাম মহারাজ শিলা মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন

প্রধানমন্ত্রী পুণের দেহুতে জগৎগুরু শ্রীসন্ত তুকারাম মহারাজ শিলা মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন


নয়াদিল্লি, ১৪ জুন, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পুণের দেহুতে জগৎগুরু শ্রীসন্ত তুকারাম মহারাজ শিলা মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন। 

এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেহুর পবিত্র ভূমিতে উপস্থিত হতে পেরে তিনি আনন্দিত। আমাদের শিলালিপির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সাধু-সন্ন্যাসীদের সৎসঙ্গলাভ মানব জীবনে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সন্তদের আশীর্বাদ যখন অনুভূত হয়, তখন আমরা ঈশ্বর চেতনা অনুভব করি। “আজ দেহুর এই পবিত্র তীর্থভূমিতে উপস্থিত হতে পেরে আমার সেই অনুভূতিই হচ্ছে”। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “দেহুর শিলা মন্দির ভক্তির কেন্দ্রবিন্দু যেমন হয়ে উঠেছে, পাশাপাশি ভারতের সাংস্কৃতিক ভবিষ্যৎ-ও এখান থেকে নির্ধারিত হবে। এই পবিত্র স্থানের পুনর্নির্মাণ করার জন্য আমি মন্দিরের ট্রাস্ট এবং ভক্তদের কৃতজ্ঞতা জানাই”।

প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে কয়েক মাস আগে পাল্কি মার্গে দুটি জাতীয় সড়ককে চার লেন করার শিলান্যাস কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, শ্রীসন্ত জ্ঞানেশ্বর মহারাজ পাল্কি মার্গের কাজ ৫টি পর্যায়ে সম্পন্ন হবে। সন্ত তুকারাম মহারাজ পাল্কি মার্গের কাজও তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন হবে। এর ফলে, ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ জাতীয় সড়ক নির্মিত হবে।

শ্রী মোদী জানান, বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতাকে আজও অক্ষুণ্ন রাখার যে কৃতিত্ব ভারতের রয়েছে, তা ভারতের সাধু-সন্ত ও ঋষি-মণীষীদের কারণে সম্ভব হয়েছে। “এই কৃতিত্বের দাবিদার ভারতের সন্ত পরম্পরা”। শ্রী মোদী বলেন, ভারত শাশ্বত, তার কারণ এই দেশ মণীষীদের। যুগে যুগে বিভিন্ন সময়ে আমাদের দেশ ও সমাজে কোনও না কোনও মহান পুরুষের আবির্ভাব ঘটেছে, যিনি আমাদের পথ দেখিয়েছেন। আজ দেশ সন্ত কবীরদাসের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি শ্রী সন্ত জ্ঞানেশ্বর মহারাজ, সন্ত নিবৃত্তিনাথ, সন্ত সোপানদেব এবং আদিশক্তি মুক্তাবাঈ – এর জন্মবার্ষিকীর কথাও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত তুকারামজীর দয়া, করুণা এবং সেবার আদর্শ আজও আমরা তাঁর ‘অভঙ্গ’ – এর মাধ্যমে লালন করি। এই ‘অভঙ্গ’ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সকলকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি এ বিষয়ে আরও জানান, যাঁর কোনও বিনাশ নেই, যা শাশ্বত, যুগোপযোগী – তাকেই বলে ‘অভঙ্গ’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজও দেশ তার সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে পাথেয় করে এগিয়ে চলেছে। সন্ত তুকারামের অভঙ্গ আমাদের শক্তি যোগায়। তিনি বিভিন্ন সন্তের ‘অভঙ্গ’গুলির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রী মোদী বলেন, মানুষের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে এই ‘অভঙ্গ’গুলি আমাদের সাহায্য করে। দেশের এবং সমাজের জন্য এই শিক্ষা আধ্যাত্মিকবোধকে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়ারকারী তীর্থযাত্রীদের বার্ষিক পান্ধারপুর যাত্রা এই শিক্ষা অনুসরণ করেই অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের মহান মণীষীদের ঐতিহ্য সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিসওয়াস ও সবকা প্রয়াস ভাবনাকে অনুপ্রাণিত করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ওয়ারকারী সংস্কৃতিতে লিঙ্গ বৈষম্য না থাকার কথা উল্লেখ করেন এবং তাঁদের অন্ত্যোদয়ের ভাবনার প্রশংসা করেন। আজ দেশে দলিত, বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া শ্রেণী, আদিবাসী ও শ্রমিকদের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের মতো জাতীয় নায়কের জীবনে তুকারামজীর মতো সাধু-সন্ন্যাসীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করায় যখন বীর সাভারকরকে শাস্তিভোগ করতে হয়েছিল, সেই সময় তিনি কারাগারে হাতকড়াকে ছিপলির মতো ব্যবহার করে তুকারামজীর ‘অভঙ্গ’গুলিকে গাইতেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে সন্ত তুকারাম মানুষের মধ্যে শক্তি যুগিয়েছেন। পান্ধারপুর যাত্রার মতো জগন্নাথ, মথুরায় ব্রজ পরিক্রমা, কাশীতে পঞ্চকোশী পরিক্রমা, চারধাম যাত্রা ও অমরনাথ যাত্রার কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আমাদের দেশের এ ধরনের বৈচিত্র্য দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর ভাবনাকে সঞ্চারিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী হয়। “আজ ভারতের উন্নয়নে আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিকাঠামো সমার্থক, উন্নয়ন ও ঐতিহ্য যাতে একই সঙ্গে এগিয়ে চলে আমরা তা নিশ্চিত করেছি”। এ প্রসঙ্গে তিনি পাল্কি যাত্রা, চারধাম যাত্রায় নতুন মহাসড়ক নির্মাণ, অযোধ্যায় রাম মন্দির, নবরূপে কাশী বিশ্বনাথ ধামকে সাজিয়ে তোলা এবং সোমনাথের উন্নয়নমূলক কাজের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও, শ্রী মোদী ‘প্রসাদ’ কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন তীর্থ ক্ষেত্রের উন্নয়নের উদ্যোগের কথা জানান। রামায়ণ সার্কিট এবং বাবাসাহেবের পঞ্চতীর্থ উন্নয়নের কাজ চলছে। সকলের উদ্যোগ যদি সঠিক দিকে এগোয়, তা হলে দীর্ঘদিন ধরে সমাধান না হওয়া বিভিন্ন সমস্যারও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসে। আজ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে সমস্ত কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা যাতে ১০০ শতাংশ মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। দরিদ্র মানুষেরা তাঁদের নিত্য প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলি এইসব প্রকল্পের মাধ্যমে পূরণ করতে পারছেন। এই প্রসঙ্গে স্বচ্ছ্ ভারত অভিযানে সকলের অংশগ্রহণ ও জীবনের প্রতিটি স্তরে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার শপথ গ্রহণের কথা প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি উপস্থিত সকলকে এইসব জাতীয় শপথগুলিকে তাঁদের আধ্যাত্মিক শপথের সঙ্গে যুক্ত করার আহ্বান জানান। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কৃষি কাজ, যোগাভ্যাসকে জনপ্রিয় করে তোলা ও যোগ দিবস উদযাপনে অংশগ্রহণ করার জন্য তিনি সকলকে পরামর্শ দেন। 

ওয়ারকারী সম্প্রদায়ের সাধু এবং কবি সন্ত তুকারাম তাঁর আধ্যাত্মিক ‘অভঙ্গ’ কবিতাগুলির জন্য বিখ্যাত। এই কবিতাগুলি কীর্তন আঙ্গিকে ওয়ারকারী সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাঁদের প্রার্থনার সময় উপস্থাপিত করেন। সন্ত তুকারাম দেহুতে বসবাস করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর ঐ স্থানে একটি শিলা মন্দির নির্মিত হয়। তবে, সেই সময় এটি মন্দিরের আদলে নির্মিত হয়নি। বর্তমানে ৩৬টি চূড়া সম্বলিত নবনির্মিত এই মন্দিরে সন্ত তুকারামের একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 

PG/CB/SB