Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী নতুন দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে শিখ প্রতিনিধিদলকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন

প্রধানমন্ত্রী নতুন দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে শিখ প্রতিনিধিদলকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন


নতুন দিল্লি, ২৯ এপ্রিল, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ তাঁর সরকারি বাসভবন ৭ লোক কল্যাণ মার্গে এক শিখ প্রতিনিধিদলকে অভ্যর্থনা জানান। এই প্রতিনিধি দলে সমাজে সর্বস্তরের মানুষ ছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরি এই উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে তাঁর সুদীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “গুরুদ্বারে যাওয়া, সেবায় সময় কাটানো, লঙ্গরখানায় খাওয়া, শিখ পরিবারের বাড়িতে থাকা আমার জীবনের অঙ্গ।” তিনি আরও বলেন, শিখ গুরুদের চরণধূলি বিভিন্ন সময়ে তাঁর বাসভবনে পড়েছে। তাঁদের সান্নিধ্য পাওয়া আমার সৌভাগ্য। বিদেশ সফরের সময় সারা বিশ্বে শিখ ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থানগুলি ঘুরে দেখার কথাও তিনি স্মরণ করেন।

শ্রী মোদী আরও বলেন, “আমাদের গুরুরা পরাক্রম এবং সেবার মানসিকতা শিখিয়েছেন।” ভারতের মানুষ কোনো সহায় সম্পদ ছাড়াই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গেছেন এবং শ্রমদানের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করেছেন। আজ এটাই নতুন ভারতের উদ্দীপনা বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

নতুন ভারতের মানসিকতার প্রতি পুনরায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নতুন ভারত সাফল্যের নতুন শিখর স্পর্শ করছে এবং সারা বিশ্বে তার ছাপ রাখছে।” করোনা মহামারীর সময়ই তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মহামারীর সময় সেকেলে মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ ভারত সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু আজ মানুষ মহামারী মোকাবিলায় ভারতের উদাহরণ তুলে ধরছেন। আগে ভারতে বিপুল জনসংখ্যার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। এমনকি অনেকে ভারতের টিকা সম্পর্কেও সন্দীহান ছিলেন। কিন্তু আজ ভারত সর্ববৃহৎ টিকা উৎপাদক দেশ হয়ে উঠেছে। আপনারা এটা শুনে গর্ববোধ করবেন যে, দেশে ৯৯ শতাংশ টিকাকরণ হয়েছে ভারতে উৎপাদিত টিকার মাধ্যমেই।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কঠিন এই সময়ে ভারত স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রের জন্য অনুকূল সুযোগ সুবিধা গড়ে তুলেছে। ভারতে ইউনিকর্নের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ভারতের ক্রমবর্ধমান মর্যাদা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রবাসী ভারতীয়দের কাছেও সন্তুষ্টি ও গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রবাসী ভারতীয়দের আমি সর্বদাই দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে গণ্য করি। আপনারা সকলেই বিদেশে ভারতমাতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ও স্বতন্ত্র পরিচয় রাখেন। তিনি বলেন, ভারত আজ যে অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে, সে সম্পর্কেও প্রবাসী ভারতীয়রা গর্ববোধ করেন। শ্রী মোদী বলেন, আমরা বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকি না কেন, ভারতই প্রথম – এবিষয়ে আমাদের আস্থা রাখা প্রয়োজন। 

ভারতীয় গুরুদের মহান অবদান ও তাদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করে বলেন, কিভাবে গুরু নানক দেব জি সমগ্র জাতির চেতনা জাগ্রত করেছিলেন এবং দেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুরুরা সারা ভারত ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং সর্বত্রই তাঁদের ছাপ ও প্রেরণা রেখেছেন। তাঁরা সর্বত্রই পুঁজিত হন এবং তাঁদের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “গুরুদের চরণধূলি এই মহান ভূমিকে পবিত্র এবং মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।” শিখ ঐতিহ্য এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের এক জীবন্ত পরম্পরা। স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং স্বাধীনতার পর শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ যে অবদান রেখেছেন তার জন্য শ্রী মোদী দেশবাসীর হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “শিখ সম্প্রদায় দেশের সাহস, পরাক্রম ও কঠোর পরিশ্রমের সমার্থক।”

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আরও একবার তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির কথা প্রকাশ করেন। এসম্পর্কে তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম কেবল একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রকৃত পক্ষে এই সংগ্রাম ছিল হাজার বছরের চেতনা, আদর্শ, আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ ও তপস্যার বহিঃপ্রকাশ।

গুরু তেগ বাহাদুরের ৪০০ তম প্রকাশ পর্ব, গুরু নানক দেব জির ৫৫০ তম প্রকাশ পর্ব এবং গুরু গোবিন্দ সিং জির ৩৫০ তম প্রকাশ পর্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলির সঙ্গে যুক্ত হতে পারার বিষয়টিকে তিনি সৌভাগ্যের বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাঁর সরকারের মেয়াদকালে কর্তারপুর করিডর নির্মাণ, লঙ্গরখানাগুলির জন্য কর ছাড়, হরমন্দির সাহেবের জন্য এফসিআরএ-র অনুমতি তথা গুরুদ্বারগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ হয়েছে। 

কর্তব্য পালনের প্রতি গুরুদের অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অমৃত কালের সময় এই কর্তব্য বোধের উপরেই গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এবং সবকা প্রয়াসের মন্ত্র এই চেতনারই প্রকৃত প্রতিফলন। শ্রী মোদী বলেন, কর্তব্য পালনের এই বোধ কেবল বর্তমান প্রজন্মের জন্যই নয়, বরং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ, পুষ্টি ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষায় সর্বদাই সক্রিয় থাকার জন্য তিনি শিখ সম্প্রদায়ের প্রশংসা করেন। সদ্য শুরু হওয়া অমৃত সরোবর কর্মসূচিতে অবদান রাখার অনুরোধ জানিয়ে শ্রী মোদী ভাষণ শেষ করেন।

 

CG/BD/SKD/