Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


 নতুন দিল্লি, ২০ অক্টোবর, ২০২১

 

ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
ভগবান বুদ্ধের পরিনির্বান পুণ্যভূমি কুশীনগর থেকে আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা। আজ আমি একটি বিমান বন্দরের উদ্বোধন করেছি এবং একটি মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করেছি। আপনারা দীর্ঘদিন এই মেডিকেল কলেজের অপেক্ষায় ছিলেন। এখন, এখান থেকে বিমান পরিষেবা শুরু হবে এবং সেই সঙ্গে গুরুতর অসুস্থতার পরিষেবাও আপনারা পাবেন। এর সঙ্গে সঙ্গেই আপনাদের সকলের বহু দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে চলেছে। আপনাদের সকলকে অনেক অভিনন্দন।

উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দিবেন প্যাটেল, সুবিদিত কর্মযোগী উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জী, উত্তরপ্রদেশের অত্যন্ত সক্রিয় বিজেপি সভাপতি শ্রী স্বতন্ত্র দেব জী, রাজ্য সরকারের মন্ত্রীগণ শ্রী সূর্যপ্রতাপ শাহী জী, শ্রী সুরেশ কুমার খান্না জী, শ্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য জী, ডঃ নীলকান্ত তিওয়ারি জী, আমার সহকর্মী সাংসদ শ্রী বিজয় কুমার দুবে জী ও ডঃ রমাপতি রাম ত্রিপাঠি জী, অন্যান্য জনপ্রতিনিধিগণ এবং বিপুল সংখ্যায় এখানে উপস্থিত হওয়া আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা। এটা উৎসব উদযাপন ও খুশির সময়। আজ মহাঋষি বাল্মীকির জন্মবার্ষিকী। দিওয়ালি ও ছট পুজোর আর বেশি দেরি নেই। কোটি কোটি টাকার যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্পের সূচনা করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

ভাই ও বোনেরা,

মহাঋষি বাল্মীকি মহাকাব্য রামায়ণের মধ্যদিয়ে ভগবান শ্রী রাম ও মাতা জানকি-কে আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে এটাও আমাদের উপলব্ধি করিয়েছিলেন যে, সমাজের সমবেত শক্তি কি বিরাট এবং কিভাবে সমবেত প্রয়াসের মাধ্যমে প্রতিটি উদ্দেশ্য পূরণ করা সম্ভব। কুশীনগর আদর্শগত দিক থেকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও পবিত্র এলাকা।

ভাই ও বোনেরা,

নতুন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরটি সমগ্র এই অঞ্চলের ছবি পাল্টে দিতে চলেছে। মহারাজগঞ্জ ও কুশীনগরের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্প, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর না কেবল এই অঞ্চলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে, সেই সঙ্গে এই অঞ্চলের আখ চাষিরা রামকোলা ও সিসওয়াতে চিনিকলগুলিতে পৌঁছতে যে সমস্যার সম্মুখীন হতেন, তা এবার থেকে দূর হবে। কুশীনগরে নতুন মেডিকেল কলেজের সঙ্গে সঙ্গে আপনারা উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ পাবেন। বিহারের সীমান্ত লাগোয়া এলাকার মানুষও উপকৃত হবেন। এখান থেকে অনেক তরুণ প্রতিভাবানরা চিকিৎসক হয়ে ওঠার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতির আওতায় এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যার ফলে একজন ছাত্র বা ছাত্রী মাতৃভাষায় পঠন-পাঠনের সুযোগ পাবেন। এমনকি, দরিদ্র মায়ের সন্তানও চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে উঠতে পারবেন। ভাষাগত বাধার দরুণ এদের অগ্রগতির যাত্রাপথে আর কোন বিপত্তি থাকবে না। এধরণের একাধিক প্রয়াসের ফলে পূর্বাঞ্চলের হাজার হাজার নিরীহ মানুষ এনসেফেলাইটিসের মত মারণ অসুখ থেকে রক্ষা পাবেন।

বন্ধুগণ,

গন্ডক নদের বন্যা থেকে হাজার হাজার গ্রামবাসীর সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একাধিক জায়গায় বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। কুশীনগর সরকারি কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে। এমনকি, এই অঞ্চলের উচ্চাকাঙ্খী বিশেষ ভাবে সক্ষম ছেলে-মেয়েদের জন্য কলেজ তৈরি করা হচ্ছে। গ্রাম, দরিদ্র মানুষ, দলিত, বঞ্চিত শ্রেণী, পিছিয়েপড়া শ্রেণী ও আদিবাসী মানুষের কাছে মৌলিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে গত ৬-৭ বছর ধরে যে অভিযান চলছে এটি সেই লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বন্ধুগণ,

মৌলিক সুবিধা যখন হাতের নাগালে আসে তখন বড় স্বপ্ন দেখার সাহস জাগে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের মানসিকতা জাগ্রত হয়। একজন মানুষ যিনি গৃহহীন বা বস্তিতে থাকেন, তিনি যখন পাকা বাড়ি হাতে পান তখন তার আত্মবিশ্বাস কয়েকগুণ বাড়ে। পাকা বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে শৌচাগারের সুবিধা, বিদ্যুৎ সংযোগ, রান্নার গ্যাসের সংযোগ এবং পাইপ বাহিত পানীয় জলের সুবিধা তাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। এইসব সুযোগগুলি যখন দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, তখন তারা এটা উপলব্ধি করছেন যে, সরকারও তাদের যন্ত্রণা ও সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আজ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে সম্পূর্ণ আন্তরিকতা নিয়ে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নে যুক্ত রয়েছে। ডবল ইঞ্জিন সরকার দ্বিগুণ সক্ষমতায় পরিস্থিতির উন্নতিসাধন করছে। ২০১৭-তে যোগী জী সরকারের শাসন ক্ষমতায় আসার আগে যে সরকার ছিল, তারা সাধারণ মানুষের সমস্যার ব্যাপারে উদাসীনতা দেখিয়েছেন। তারা চাইতো না যে, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচির সুফলগুলি রাজ্যের দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছে যাক। তাই প্রতিটি প্রকল্প, প্রতিটি পরিকাঠামো সম্পর্কিত কর্মকান্ড বিগত সরকারের আমলে বিলম্বিত হয়েছে। রাম মনোহর লোহিয়া জী প্রায়শই বলতেন, করুণার সঙ্গে কর্মকান্ডকে যুক্ত করুন, পূর্ণ সহনশীলতার সঙ্গে সামিল হন।

কিন্তু আগে যারা সরকারে শাসন ক্ষমতায় ছিল, তারা দরিদ্র মানুষের দুঃখ-যন্ত্রণায় গুরুত্বই দেয়নি। আগের সরকারগুলি যাবতীয় কর্মকান্ডকে দুর্নীতি ও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত করেছিল। উত্তরপ্রদেশবাসী এই ধরণের মানুষের পরিচিতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন রয়েছেন। শাসন ক্ষমতায় থাকা এই ধরণের ব্যক্তিরা কেবল নিজের পরিবারের ভাল করেছেন, কিন্তু উত্তরপ্রদেশের এবং সমাজের স্বার্থের কথা ভুলে গেছেন।

বন্ধুগণ,

দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজ্য হওয়া সত্বেও একসময় উত্তরপ্রদেশকে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের জায়গা বলে গণ্য করা হত। কিন্তু আজ উত্তরপ্রদেশ দেশের প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সমগ্র দেশ এটা উপলব্ধি করেছে যে, বিগত কয়েক বছরে তা সে স্বচ্ছ ভারত অভিযানই হোক বা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই – সব ক্ষেত্রেই এই রাজ্যটি অগ্রভাগে থেকেছে। দেশে সর্বাধিক সংখ্যায় টিকাকরণের নিরিখে যদি কোন রাজ্য সবার উপরে থাকে তাহলে সেটি হল উত্তরপ্রদেশ। এমনকি, যক্ষার বিরুদ্ধে লড়াইয়েও উত্তরপ্রদেশ যথাসাধ্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা যখন অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে চলেছি, তখন উত্তরপ্রদেশেরও বড় ভূমিকা থাকছে।

বন্ধুগণ,

উত্তরপ্রদেশে কর্মযোগী সরকার গঠনের পর মা-বোনেরা উপকৃত হয়েছেন। অধিকাংশ নতুন বাড়ি মা-বোনেদের নামে নথিভুক্ত হয়েছে। এই বাড়িগুলিতে শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে, যার ফলে মা-বোনেদের কেবল সুবিধাই হয়নি, সেই সঙ্গে তাদের মর্যাদাও সুরক্ষিত হয়েছে। উজালা গ্যাস সংযোগের ফলে তাদের রান্না ঘরের ধোঁয়া থেকে মুক্তি মিলেছে। এখন প্রতিটি বাড়িতে পাইপবাহিত জল সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার অভিযান চলছে। কেবল ২ বছরে রাজ্যে ২৭ লক্ষ পরিবার বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংযোগ পেয়েছেন।

বন্ধুগণ,

কেন্দ্রীয় সরকার আরও একটি কর্মসূচি শুরু করেছে। এর ফলে, উত্তরপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে অদূর ভবিষ্যতে সমৃদ্ধির নতুন দরজা খুলে যাবে। এই কর্মসূচির নামকরণ হয়েছে পিএম সামিত্ব যোজনা। এই কর্মসূচির আওতায় গ্রামগুলিতে বাড়ির মালিকানা সম্পর্কিত নথিপত্র দেওয়া হচ্ছে। ড্রোনের সাহায্যে গ্রামগুলিতে জমি ও সম্পত্তির মানচিত্র নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্পত্তির আইনি কাগজপত্র হাতে পেলে তা কেবল জবরদখলের ভীতি দূর করে না, সেই সঙ্গে ব্যাঙ্ক থেকে সহজে ঋণ সুবিধা পাওয়া যায়। রাজ্যের যুব সম্প্রদায় তাদের জমি ও বাড়ির ভিত্তিতে কর্মজীবন শুরু করতে চায়। সামিত্ব কর্মসূচির মাধ্যমে তারা লাভবান হতে পারেন।

ভাই ও বোনেরা,

রাজ্যে গত সাড়ে ৪ বছরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ২০১৭-র আগে ক্ষমতাসীন সরকারগুলি মাফিয়াদের দরাজ ও লুঠতরাজের স্বাধীনতা দিয়েছিল। কিন্তু আজ যোগী জীর নেতৃত্বে মাফিয়ারা ক্ষমা প্রার্থনা চাইছে। যোগী জী যে সব পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার ফলে মাফিয়াদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এখন তারা নিজদের কৃত কর্মের জন্য অনুতাপ বোধ করছেন। যোগী জী ও তার দল ভূমি মাফিয়াদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন। যারা দরিদ্র, দলিত, পিছিয়েপড়া, বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষের জমি একসময় জোর করে হস্তগত করেছে।

বন্ধুগণ,

আইনের শাসন থাকলে অপরাধীদের মধ্যেও ভীতি কাজ করে। অন্যদিকে, উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলির সুবিধা দরিদ্র, দলিত, পিছিয়েপড়া শ্রেণীর মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে যায়। অবশ্য, এই সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় নতুন সড়ক, রেল, মেডিকেল কলেজ ও অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে। আর আজ যোগী জী ও তার দল ঠিক এটাই করে দেখাচ্ছেন। উত্তরপ্রদেশে নতুন নতুন প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। এখন রাজ্যের একটি বা দুটি শহরে শিল্পোন্নয়ন থেমে নেই। পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলিতেও শিল্প-প্রসার ঘটছে।

বন্ধুগণ,

উত্তরপ্রদেশ সম্পর্কে একটি কথা প্রায়শই বলা হয় যে, এই রাজ্য থেকেই দেশ সর্বাধিক সংখ্যায় প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন। এটাই উত্তরপ্রদেশের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু, উত্তরপ্রদেশের পরিচিতিকে কেবল এই একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ রাখা যায় না। উত্তরপ্রদেশকে কেবল ৬-৭টি দশকে সীমিত রাখা যায় না। উত্তরপ্রদেশ এমন এক পবিত্র ভূমি যার ইতিহাস অসীম, যার অবদান অশেষ। ভগবান রাম এই ভূমি থেকেই আবির্ভূত হয়েছিলেন। ঠিক যেমন হয়েছিলেন ভগবান কৃষ্ণ। জৈন ধর্মের ২৪ জন তীর্থঙ্করদের মধ্যে ১৮ জনই উত্তরপ্রদেশ থেকে আবির্ভূত। আপনারা যদি মধ্যযুগের কথা স্মরণ করেন, তাহলে দেখতে পাবেন তুলসিদাস ও কবিরদাস এই উত্তরপ্রদেশেই আবির্ভূত হয়েছিলেন। পবিত্র এই ভূমির সঙ্গে সন্ত রবিদাসের মত সমাজ সংস্কারের আবির্ভাব জড়িয়ে রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ এমন একটি এলাকা যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপে তীর্থযাত্রা হয়। এই রাজ্যে প্রতিটি মাটির কণায় আধ্যাত্মিকতা জড়িয়ে রয়েছে। নৈমিশারন্যে বেদ ও পুরান রচিত হয়েছিল। অওয়ধ এলাকায় অযোধ্যা তীর্থস্থান রয়েছে। রাজ্যের চিত্রকূট ও বুন্দেলখন্ডেও পুণ্যতীর্থ কেন্দ্র রয়েছে। সর্বোপরি তীর্থরাজ প্রয়াগ এই উত্তরপ্রদেশেই। আর এখানেই শেষ নয়, আপনি যদি কাশীতে আসেন তাহলে আপনার যাত্রা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি আপনি সারনাথ সফর না করেন। আর এখানেই ভগবান বুদ্ধ তাঁর প্রথম ধর্মোপদেশ পেয়েছিলেন। আমরা এখন কুশীনগরে উপস্থিত রয়েছি। সারা বিশ্ব থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বিরা এখানে এসেছেন। আজ অনেকেই প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানে এখানে এসে পৌঁছেছেন। বিদেশী নাগরিকরা যখন কুশীনগরে এসেছেন তখন তারা অবশ্যই শ্রাবস্তি, কৌশম্বি ও সানকিসা তীর্থস্থান ঘুরে দেখবেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে এখানে প্রতিটি জায়গায় এত পবিত্র যে, অনেকেই এখান থেকে ধর্ম উপদেশ পেয়েছিলেন। এমনকি, আমাদের অন্যতম গৌরবময় শিখ গুরুদের ঐতিহ্যের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। আগ্রায় গুরু কা তাল গুরুদ্বার এমন একটি পবিত্র কেন্দ্র যেখানে গুরু তেগ বাহাদুর জী ঔরঙ্গদেবকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। উত্তরপ্রদেশের গৌরব দেশ বিদেশের সমীহ আদায় করেছে। তাই আমরা এই রাজ্যের সমৃদ্ধ পরম্পরাগত ঐতিহ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছি।

বন্ধুগণ,

আমি জানি যে, যখন আমি উত্তরপ্রদেশের সম্ভাবনার প্রশংসা করি তখন অনেকেই খুব রুষ্ট হয়ে ওঠেন। উত্তরপ্রদেশ এখন দেশ ও বিদেশে তার নতুন পরিচিত গড়ে তুলছে। কিন্তু, কেউ যদি প্রকৃত বাস্তবের কথা শুনে বিরক্ত বোধ করেন, তাহলে গোস্বামী তুলসিদাস জীর কথা তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে। গোস্বামী তুলসিদাস জী বলেছিলেন, যেখানে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়, সেখানে সর্বদাই খুশি বিরাজ করে এবং যেখানে বিদ্বেষ থাকে সেখানে সর্বদাই অনিশ্চয়তার ছায়া প্রতিফলিত হয়। আমরা দরিদ্র মানুষের প্রতি সেবার অঙ্গীকার নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। করোনার সময় দেশে বিশ্বের বৃহত্তম নিঃখরচায় রেশন বা খাদ্যশস্য বন্টন কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের প্রায় ১৫ কোটি সুফলভোগী এই কর্মসূচির সুবিধা পেয়েছেন। আজ বিশ্বের বৃহত্তম ও দ্রুততম টিকাকরণ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এই অভিযানে ১০০ কোটি টিকাকরণের মাইলফলক অর্জিত হবে। এমনকি, কেবল উত্তরপ্রদেশেই এখনও পর্যন্ত ১২ কোটির বেশি টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

ডবল ইঞ্জিন সরকার রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়ছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা খাদ্যশস্য সংগ্রহ বাবদ জমা করা হয়েছে। পিএম কিষান সম্মান নিধির মাধ্যমে রাজ্যে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩৭ হাজার কোটি টাকার বেশি জমা পড়েছে। ক্ষুদ্র কৃষকদের ক্ষমতায়ণে ও তাদের কল্যাণে এই সমস্ত কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।

ভারতের ইথানল কর্মসূচির ফলে উত্তরপ্রদেশের কৃষকরাও লাভবান হবেন। আখ ও অন্যান্য খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত জৈব জ্বালানি অশোধিত তেলের বিকল্প হয়ে উঠছে। যোগী জী ও তার সরকার গত কয়েক বছরে আখ চাষীদের জন্য প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। আজ রাজ্যের আখ চাষীরা তাদের উৎপাদনের জন্য সর্বোচ্চ দাম পাচ্ছেন। যোগী সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্বে শাসন ক্ষমতায় থাকা সরকারের মেয়াদ কালে আখ চাষীদের ১ লক্ষ কোটি টাকারও কম দাম মেটানো হয়েছিল। একই সময়ে যোগী সরকার ৫ বছরের মেয়াদ পূরণ হওয়ার আগেই আখ চাষীদের দেড় লক্ষ কোটি টাকা দাম মিটিয়েছে। জৈব জ্বালানী উৎপাদনের জন্য উত্তরপ্রদেশে যে সমস্ত কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে, তার ফলে আখ চাষীরা প্রকৃতপক্ষেই লাভবান হবেন।

ভাই ও বোনেরা,

উত্তরপ্রদেশের আশা-আকাঙ্খা পূরণের সময় হয়েছে। তাই এখন সময় এসেছে আমাদের সকলের একত্রিত হওয়ার। আমাদের কেবল আগামী ৫ মাসের জন্য নয়, বরং আগামী ২৫ বছরের লক্ষ্যকে মাথায় রেখে উত্তরপ্রদেশের জন্য পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে হবে। কুশীনগর, পূর্বাঞ্চল ও উত্তরপ্রদেশের আশীবার্দ সঙ্গে নিয়ে এবং আপনাদের সকলের প্রয়াসকে সম্বল করে রাজ্যের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করা সম্ভব। আমি আরও একবার অনেক নতুন সুযোগ-সুবিধা তৈরি হওয়ার জন্য আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। দীপাবলি ও ছট পুজোর আগাম শুভেচ্ছা জানাই। আমি আপনাদের কাছে আরও একটি অনুরোধ করতে চাই, আর এটি হল, দেশীয় পণ্য কিনুন ও তার প্রসার ঘটান। আমরা যদি দীপাবলিতে প্রতিবেশী ভাই ও বোনেদের কিছু সামগ্রী উপহার হিসেবে দিই, তাহলে তাদের জীবন আরও রঙিন হয়ে উঠবে। সর্বত্রই এক নতুন ভোরের আলো ও প্রাণশক্তিতে ভাস্বর হয়ে উঠবে। তাই উৎসবের সময় আমাদের যত বেশি সম্ভব স্থানীয় পণ্য কিনতে হবে। এই অনুরোধ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের অনেক ধন্যবাদ জানাই।

ধন্যবাদ!
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!
ভারত মাতার জয়!

বিশেষ দ্রষ্টব্য : এটি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আক্ষরিক অনুবাদ নয়। মূল ভাষণ হিন্দিতে দেওয়া হয়েছিল।

CG/BD/AS/