Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জাতির উদ্দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ (একবিংশ পর্ব) অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ


আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের নমস্কার! গতবছর গরমের দোর্দণ্ড প্রতাপ, জলের অভাব, খরা পরিস্থিতি, এরকম কত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু গত দু-সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির খবর আসছে। বৃষ্টির খবরের সঙ্গে সঙ্গে তরতাজা অনুভব হচ্ছে। আপনিও নিশ্চয় অনুভব করছেন, যেরকম বৈজ্ঞানিকরা বলছেন, এবছর বৃষ্টির পরিমাণ যথেষ্ট হবে, সব জায়গাতেই হবে, বর্ষাকালের পুরো সময়টাতেই বৃষ্টি হবে। এটা একটা নতুন উৎসবের সঞ্চার করবে। আমি সকল কৃষক ভাইদের ভালো বৃষ্টির শুভকামনা জানাই।

আমাদের দেশে কৃষকরা যেমন পরিশ্রম করেন, তেমনি বৈজ্ঞানিকেরা দেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। আমি তো আগে থেকেই ভাবছি আমাদের নতুন প্রজন্ম বৈজ্ঞানিক হওয়ার স্বপ্ন দেখুক ও বিজ্ঞান বিষয়কে পছন্দ করুক। আগামী প্রজন্মের জন্য নতুন কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে আমাদের যুব সম্প্রদায় এগিয়ে আসুক। আমি আজকেও এক খুশির কথা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। গতকাল আমি পুনে গিয়েছিলাম, ‘স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট’-এর প্রথম বর্ষপূর্তিতে সেখানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। সেখানে আমি পুনের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সেই সকল ছাত্র-ছাত্রী – যাঁরা নিজেদের পরিশ্রমে একটি উপগ্রহ তৈরি করেছেন – ২২শে জুন যার সফল উৎক্ষেপণ হয়, ওই সব ছাত্র-ছাত্রীদের সাক্ষাতের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলাম। কারণ আমার মনে হতো এই সব যুব-বন্ধুদের একবার তো দেখি, ওদের সঙ্গে পরিচয়টা তো করি। ওদের মধ্যে যে শক্তি লুকিয়ে আছে, যে উৎসাহ আছে, সেগুলিকে অনুভব করি। গত কয়েক বছর ধরে অনেক ছাত্র-ছাত্রী এই কাজে যোগ দিয়েছেন। এই অ্যাকাডেমিক স্যাটেলাইট-এর ব্যবহার আমাদের যুব সম্প্রদায়ের প্রতিভার এক জ্বলন্ত উদাহরণ। এটা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা বানিয়েছেন। এই ছোটো একটি স্যাটেলাইট-এর মধ্যে এক বড়ো স্বপ্ন অন্তর্নিহিত আছে। এটা অনেক উচ্চতা পার করবে, এই পরিশ্রমের গভীরতা অনেক। যেভাবে পুনের ছাত্ররা করে দেখিয়েছে, সেরকম তামিলনাড়ু-র চেন্নাইয়ের সত্যভামা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা তৈরি সত্যভামা স্যাটেলাইট-এরও উৎক্ষেপণ হয়েছে। আমরা ছোটোবেলা থেকে এই কথা শুনে আসছি যে প্রত্যেক বালকের মনে আকাশকে ছোঁয়া আর কিছু তারাদের মুষ্টিগত করার ইচ্ছা সবসময় থাকে। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে ইসরো দ্বারা উৎক্ষেপিত, ছাত্রদের দ্বারা বানানো এই দু’টি স্যাটেলাইট – আমি মনে করি অনেক গুরুত্ব বহন করে। এই ছাত্ররা অভিনন্দিত হওয়ার যোগ্য। আমি দেশবাসীকেও অনেক অনেক অভিনন্দন জানাতে চাই যে ২২-শে জুন ইসরোর বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে ২০টি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়ে নিজেদের আগের রেকর্ডকে ভেঙে এক নতুন রেকর্ডের সৃষ্টি করেছেন। এটাও আনন্দের কথা যে, ভারত যে ২০-টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে তার মধ্যে ১৭-টিই অন্য দেশের। আমেরিকা সমেত অন্যান্য অনেক দেশের স্যাটেলাইট-এর উৎক্ষেপণ হল আমাদের দেশের মাটি থেকে – ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দ্বারা। এর সঙ্গে আমাদের ছাত্রদের দ্বারা তৈরি ওই দুটি স্যাটেলাইটও মহাকাশে পৌঁছলো। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো – ইসরোর কম খরচ আর সাফল্যের গ্যারান্টির জন্য সমগ্র বিশ্বে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে, যার ফলে বিশ্বের অনেক দেশ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের জন্য ভারতের দিকে নজর দিচ্ছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘বেটি বাঁচাও – বেটি পড়াও’ – এই শ্লোগান এখন ভারতবর্ষের প্রত্যেক মানুষের মনের কথা হয়ে উঠেছে। কিন্তু কিছু কিছু ঘটনা এতে নবজীবন নিয়ে আসে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে। এবারের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের মেয়েরা অনেক এগিয়ে রয়েছে – এতো আমাদের গর্ব। আমার দেশবাসীগণ, আসুন আমরা সবাই গর্ববোধ করি আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার জন্যও – ভারতীয় বায়ু সেনায় মহিলা পাইলটদের প্রথম ব্যাচ ফাইটার পাইলট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলো। এটা শুনতেই রোমাঞ্চ বোধ হয়, তাই না? কত গর্ব বোধ হয় আমাদের তিন মহিলা অফিসার – অবনী চতুর্বেদী, ভাবনা কণ্ঠ এবং মোহনা – যাঁরা আমাদের গৌরবান্বিত করেছেন। এই তিনজনের বিশেষ কথা হলো – ফ্লাইং অফিসার অবনী মধ্যপ্রদেশের রেওয়া-র বাসিন্দা ফ্লাইং অফিসার ভাবনা বিহারের বেগুসরায়ের এবং ফ্লাইং অফিসার মোহনা গুজরাতের ভদোদরার বাসিন্দা। আপনারা লক্ষ্য করেছেন এই তিন মহিলা ভারতবর্ষের কোনো মেট্রো শহরের নন। এঁরা নিজেদের রাজ্যের রাজধানীতেও বসবাস করেন না। এঁরা ছোটো শহরে থেকেও আকাশের মতো উঁচু স্বপ্ন দেখেছেন আর বাস্তবায়িতও করেছেন। আমি অবনী, মোহনা, ভাবনা – এই তিন কন্যাকে আর ওদের মা-বাবাকেও মন থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।

আমার প্রিয় দেশবাসী, কিছুদিন আগে সারা বিশ্বে ২১-শে জুন ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’-এর প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল। যোগ-এর সঙ্গে যুক্ত একজন ভারতীয় হওয়ার সুবাদে আমরা অনুভব করি যে বিশ্ব আমাদের কাল – আজ আর আগামীকালের সঙ্গে সংযোজিত হচ্ছে। সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে আমাদের এক মধুর সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। ভারতবর্ষেও এক লক্ষের বেশি জায়গায় অনেক আশা আর উৎসাহের সঙ্গে, বিভিন্ন রঙ-বেরঙের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক যোগ পরব পালিত হয়েছে। আমাকেও চণ্ডীগড়ে হাজার হাজার যোগ-প্রেমীদের সঙ্গে ওদের মাধ্যমে যোগাসন করার সুযোগ হয়েছে। আবাল-বৃদ্ধ সবার উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। আপনারা হয়তো দেখেছেন, গত সপ্তাহে ভারত সরকার এই আন্তর্জাতিক যোগ পরব উপলক্ষেই ‘সূর্য নমস্কার’-এর এক ডাক টিকিটও প্রকাশ করেছে। এবার সমগ্র বিশ্বে যোগ-দিবস-এর সঙ্গে সঙ্গে দুটো বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, প্রথমতঃ আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে যেখানে রাষ্ট্রসঙ্ঘের কার্যালয় রয়েছে, সেই ভবন-এর উপর যোগাসনের বিভিন্ন ভঙ্গি বিশেষ ভাবে প্রোজেক্‌শান করা হয়েছিল, সেখানে যাতায়াত করা লোকেরা তার ফোটো তুলে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন। আপনারাই বলুন, এই ঘটনা কোন্‌ ভারতীয়কে গৌরবান্বিত করবে না? আর একটা কথা, প্রযুক্তি নিজের কাজ করে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার এক নিজস্ব পরিচিতি হয়ে গেছে। এইবার ট্যুইটারে যোগা ইমেজ-এর সঙ্গে সেলিব্রেশনের ছোটোখাটো প্রয়োগও করেছে। মোবাইলে ‘হ্যাশট্যাগ যোগা ডে’ টাইপ করলেই যোগাসনের ভঙ্গির চিত্র আমাদের মোবাইল ফোনে ভেসে উঠছিলো এবং সেগুলো সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। যোগের অর্থই হলো সংযোজন। সমগ্র বিশ্বকে সংযোগ করার ক্ষমতা যোগের মধ্যে রয়েছে। কেবল দরকার আমাদের যোগের মধ্যে নিজেদের সংযুক্ত হওয়ার।

মধ্যপ্রদেশের সাতনা থেকে স্বাতী শ্রীবাস্তব যোগ দিবস পালিত হওয়ার পর আমাকে টেলিফোন করেছিলেন, উনি আপনাদের সকলের জন্য আমাকে একটি মেসেজ দিয়েছেন, কিন্তু আমার মনে হয়, ওই ম্যাসেজ আমার জন্য বেশি প্রাসঙ্গিক –

“আমি চাই যে আমার সমগ্র দেশ সুস্থ থাকুক, দেশের দরিদ্র মানুষেরাও নিরোগ থাকুক, এর জন্য আমি চাই – দূরদর্শনে প্রত্যেক সিরিয়ালের মাঝে যত বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়, এর মধ্যে অন্তত একটি বিজ্ঞাপন যোগাসনের সম্পর্কে বলুক, কীভাবে করা যায় এই আসন এবং কী কী উপযোগিতা।

স্বাতীজী আপনার পরামর্শ খুব ভালো, কিন্তু যদি আপনি একটু মনোযোগ সহকারে দেখেন, আপনি দেখতে পাবেন, বর্তমানে কেবল দূরদর্শন নয়, ভারতে ও ভারতের বাইরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল যোগ ব্যায়াম নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করে যোগাসনের ক্ষেত্রকে সম্প্রসারিত করছে। প্রত্যেক চ্যানেলের আলাদা আলাদা সময় রয়েছে। আপনি যদি একটু নজর দিয়ে দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন যোগ বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানার জন্যই এসব করা হচ্ছে। আমি এটাও দেখেছি, বিশ্বে কিছু দেশ আছে যেখানে বিভিন্ন চ্যানেলে চব্বিশ ঘণ্টা যোগ সম্পর্কিত অনুষ্ঠান চলছে। আর আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে আমি জুন মাসে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ উপলক্ষে প্রত্যেক দিন ফেসবুক ও ট্যুইটার-এ একটি করে আসনের ভিডিও শেয়ার করতাম। যদি আপনারা আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যান, তাহলে ৪০-৪৫ মিনিট পর্যন্ত একটির পর একটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য কী ধরণের যোগাসন করতে পারেন, সকল বয়সের যোগ করতে সমর্থ এরকম যোগাসন-এর ভিডিও-ও এই ওয়েবসাইটে পাবেন। আমি আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে যোগ সম্পর্কে উৎসাহী সবাইকে অনুরোধ করছি যে এই ওয়েবসাইট অবশ্যই দেখুন।

রোগ থেকে মুক্তির একটি মাধ্যম হল যোগ। যোগ সম্পর্কিত যতগুলি ধারা আছে, তার প্রত্যেকটির ধরণ আলাদা, অগ্রাধিকার আলাদা, অনুভবও আলাদা – কিন্তু তাদের লক্ষ্য এক। যোগের যত পদ্ধতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, যত ধরনের যোগগুরু আছেন, সকলের কাছে আমি জানতে চেয়েছি চলতি বছর ধরে আমরা কি ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে যোগের এক সফল অভিযান চালাতে পারি? যোগব্যায়াম কি ডায়াবেটিস-কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? কিছু মানুষ এতে উপকৃত হয়েছেন। প্রত্যেকেই নিজের নিজের মতো করে নিরাময়ের রাস্তা খুঁজছেন যদিও আমরা জানি যে ডায়াবেটিস পুরোপুরি সারে না। সারাজীবনই এর জন্য ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। এটি এমনই একটি রাজরোগ যা অন্য রোগেদের ডেকে আনে। এই রোগ অন্য সব রোগের প্রবেশপথ হয়ে দাঁড়ায় আর এইজন্যই সবাই ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে চায়। অনেকেই ডায়াবেটিস রোগ নিয়ে কাজ করেছেন। কিছু ডায়াবেটিক রোগীও যোগাভ্যাস করে রোগকে আয়ত্তের মধ্যে রাখতে পেরেছেন। আসুন, আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিই, যাতে এই রোগমুক্তির প্রক্রিয়া একটা গতি পায় এবং সারা বছর ধরে এব্যাপারে একটা সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা যায়। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনারা ‘হ্যাশট্যাগ যোগা ফাইটস্‌ ডায়াবেটিস’, আবার বলছি ‘হ্যাশট্যাগ যোগা ফাইটস্‌ ডায়াবেটিস’ এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনাদের অভিজ্ঞতা সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শেয়ার করুন অথবা ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এ আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। দেখা তো তো যাক, কার কেমন অভিজ্ঞতা – চেষ্টা তো করা যাক। ‘হ্যাশট্যাগ যোগা ফাইটস্‌ ডায়াবেটিস’-এ নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার জন্য আমি আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, কখনও কখনও আমার ‘মন কি বাত’ নিয়ে খুব ঠাট্টা-তামাসা করা হয়। অনেক আলোচনাও হয় – এটা যে সম্ভব হয়, তার কারণ হল, আমরা গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধ। কিন্তু আজ, এই ২৬-শে জুন, যখন আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে জানাতে চাই, যে গণতন্ত্রকে নিয়ে আমরা গর্ব করি, যে গণতন্ত্র আমাদের বিপুল ক্ষমতা যোগায়, দেশের প্রতিটি নাগরিককে যা বিরাট শক্তি দিয়েছে – ১৯৭৫ সালের ২৬-শে জুন তার জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ওই বছর ২৫-শে জুনের রাত এবং ২৬-শে জুনের সকাল ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য ছিল একটি কালো দিন – সেই দিনই ভারতে ‘জরুরী অবস্থা’ জারি হয়েছিল। নাগরিকদের সমস্ত অধিকার খর্ব করে দেওয়া হয়েছিল। দেশকে জেলখানা বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জয়প্রকাশ নারায়ণ সহ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে, হাজার হাজার নেতাকে, বহু সংগঠনের কর্মীকে সেদিন কারাগারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা নিয়ে বহু বই লেখা হয়েছে। অনেক আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু আজ এই ২৬-শে জুন আমি যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, তখন একথা যেন ভুলে না যাই যে, গণতন্ত্রই আমাদের শক্তি। আমাদের জোর হল এদেশের জনশক্তি, দেশের প্রতিটি নাগরিক আমাদের শক্তি। এই দায়বদ্ধতাকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, আরও শক্তিশালী করতে হবে। ভারতবাসীদের জোর এটাই যে তাঁরা দীর্ঘসময় গণতন্ত্রকে চালু রেখে দেখিয়েছেন। খবরের কাগজ যদি বন্ধও হয়ে যায়, রেডিও যদি একই বুলি বলতে থাকে, তবু অন্যদিকে দেশের মানুষ সুযোগ পেলেই ঠিক গণতন্ত্রের শক্তির পরিচয় দেবে। যে কোনও দেশের জন্যই এ এক বড় ভরসার কথা। ভারতের সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক ক্ষমতার সেরা উদাহরণ তৈরি হয়েছিল জরুরি অবস্থার দিনগুলিতে বার বার সেকথা দেশকে মনে করিয়ে দেওয়া দরকার। দেশবাসীকে এই শক্তি উপলব্ধি করতে হবে, শক্তি যাতে আরও জোরদার হয়, তার জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে এবং দেশের মানুষকেও সেই চেষ্টায় সংযুক্ত করতে হবে। আমি প্রায়ই বলি যে ভাই, গণতন্ত্র মানে এ-ই নয় যে লোকে ভোট দেবে আর পাঁচ বছরের জন্য আপনাদের দেশ চালানোর কন্‌ট্র্যাক্ট দিয়ে দেবে। আজ্ঞে না, ভোট তো গণতন্ত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু সেই সঙ্গে আরও অনেক বিষয় আছে, সবচেয়ে বড় বিষয় হল, জনতার অংশগ্রহণ। সরকার যত বেশি করে জনতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলবে, জনতার মেজাজ, তার ভাবনাচিন্তা বুঝতে পারবে, ততই সে দেশের ক্ষমতা বাড়বে। জনতা আর সরকারের মধ্যে মতানৈক্যই আমাদের ধ্বংসে মদত দিয়েছে। আমার সবসময়েই চেষ্টা রয়েছে যাতে জনতার অংশগ্রহণের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে চলতে পারে।

সম্প্রতি যখন আমার সরকারের দু’বছর পূর্ণ হল তখন কিছু আধুনিক বুদ্ধিসম্পন্ন তরুণ আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, আপনি তো এতবড় গণতন্ত্রের কথা বলেন, তাহলে আপনার সরকারের মূল্যাঙ্কণ আপনি সাধারণ মানুষেকে দিয়ে করাচ্ছেন না কেন? এটা একাধারে তাঁদের চ্যালেঞ্জ যেমন ছিল তেমনি পরামর্শও ছিল। এই বিষয়টা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। কিছু উচ্চপদস্থ বন্ধুর সামনে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম, তাঁদের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল এই রকম – ‘না, না, স্যার, এ আপনি কী করতে যাচ্ছেন? এখন তো প্রযুক্তি এতটাই বদলে গেছে যে কেউ যদি একজোট হয়ে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে তো সেই surveyকে যে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তার কোন ঠিকঠিকানা নেই’। তাঁরা তাঁদের দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করলেন, কিন্তু আমার মনে হল, না-না, ঝুঁকি নেওয়া দরকার, চেষ্টা করা দরকার। দেখি, কী হয়। আমার প্রিয় দেশবাসীরা, খুশির কথা এটাই যে, আমি যখন প্রযুক্তির মাধ্যমে আলাদা আলাদা ভাষায় জনগণকে আমার সরকারের মূল্যাঙ্কণ করার জন্য আহ্বান জানালাম, তখন নির্বাচনের পরেও বহু সার্ভে হল, ভোটের সময়েও সার্ভে হল, কখনও কখনও কিছু বিষয়ে এর মধ্যেও সার্ভে হল, সার্ভে হল জনপ্রিয়তা নিয়েও – তবে এর কোনটিরই স্যাম্পল সাইজ খুব বড় নয়। আপনাদের মধ্যে অনেকেই ‘Rate My Government–mygov.in’-এ আপনাদের মতামত জানিয়েছেন। যদিও লক্ষ লক্ষ লোক এতে আগ্রহ দেখিয়েছেন, কিন্তু তিন লক্ষ মানুষ এক-একটি উত্তর দেওয়ার জন্য পরিশ্রম করেছেন, অনেক সময় বার করেছেন। আমি ওই তিন লক্ষ মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ যে, তাঁরা সক্রিয়ভাবে সরকারের মূল্যাঙ্কণ করেছেন। আমি ফল নিয়ে কোনও আলোচনা করছি না, আমাদের গণমাধ্যম সেটা নিশ্চয়ই করবে। কিন্তু এটা তো আমি নিশ্চয়ই বলবো যে এটি একটি ভালো উদ্যোগ ছিল। আমার জন্যেও খুশির কথা এটাই যে, ভারতের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ, বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী এবং বিভিন্ন অবস্থানের মানুষ এতে অংশ নিয়েছেন। আমার জন্য সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে, ভারত সরকারের গ্রামীণ রোজগার যোজনার যে ওয়েবসাইট আছে, সেই পোর্টালে সবথেকে বেশি লোক উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। আমার প্রাথমিক অনুমান, দরিদ্র গ্রামীণ মানুষ এতে সক্রিয়ভাবে যোগ দিয়েছেন। এটাই আমার আরও বেশি ভালো লেগেছে। তাহলে আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন, কয়েক বছর আগে এমন একটা দিন ছিল, যখন ২৬শে জুন জনতার কন্ঠ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল আবার এটাও একটা সময় যখন জনতা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, নিজেরাই নিজেদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করছেন। সরকার ঠিক করছে না ভুল করছে, ভালো করছে না খারাপ করছে – দেখা তো যাক। এটাই তো গণতন্ত্রের শক্তি।

আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, আজ আমি একটি বিষয় আপনাদের জানাতে চাই। সে একটা সময় ছিল, যখন কর এত বেশি ছিল যে, কর ফাঁকি দেওয়া মানুষের স্বভাব হয়ে গিয়েছিল। একটা সময় ছিল যখন বিদেশী জিনিস আনার ব্যাপারে অনেক বিধিনিষেধ ছিল, তাতে চোরাচালানও খুব বেড়ে গিয়েছিল । কিন্তু ধীরে ধীরে সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। এখন করদাতাদের সরকারি কর ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আর কোনো অসুবিধা নেই। তাও পুরনো অভ্যাস সহজে যায় না। এক শ্রেণির এখনও ধারণা হল, সরকার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। আমার মনে হয়, নিয়মের আওতা থেকে পালিয়ে গিয়ে আমরা আমাদের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিই। তখন যে কোনও সামান্য মানুষও আমাদের বিব্রত করতে পারে। আমরা কেন এরকম হতে দেবো? নিজেদের আয় এবং সম্পত্তির ব্যাপারে আমরা নিজেরাই সরকারকে ঠিক ঠিক বিবরণ দিই না কেন? একবার অন্তত পুরনো বকেয়া যা-কিছু পড়ে আছে, তার থেকে মুক্ত হয়ে যান। এই বোঝা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি। যাঁদের কাছে অঘোষিত আয় আছে, তাঁদের জন্য ভারত সরকার একটা সুযোগ দিয়েছে – আপনি আপনার অঘোষিত আয় ঘোষণা করে দিন। সরকার ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অঘোষিত আয় ঘোষণা করার বিশেষ সুযোগ দিয়েছে। জরিমানা দিয়ে আমরা অনেক রকম বোঝা থেকে মুক্ত হতে পারি। আমি কথা দিয়েছি, যাঁরা স্বেচ্ছায় নিজেদের অঘোষিত সম্পত্তি ও আয়ের বিবরণ দিয়ে দেবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনও রকম তদন্ত হবে না। এত টাকা কোথা থেকে এলো, কীভাবে এলো, একবারও তা জিজ্ঞাসা করা হবে না। সেইজন্যই আমি বলছি, এটা একটা ভালো সুযোগ, আপনি এই স্বচ্ছ ব্যবস্থার অংশীদার হয়ে যান। এইসঙ্গে আমি দেশবাসীকে এটাও বলতে চাই যে, ৩০-শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্প চলবে এবং এটাকে শেষ সুযোগ বলে ধরে নিতে পারেন। আমি এর মধ্যে আমার সাংসদদেরও বলে দিয়েছি যে, ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পর যদি কোন নাগরিকের কোনও অসুবিধা হয়, যিনি এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে চাননি, তাঁকে কোনও রকম সাহায্য করা যাবে না। আমি দেশবাসীদেরও বলতে চাই, ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পর এমন কিছু না হোক যাতে আপনাদের কোনও কষ্ট হয়। এইজন্যই আমি বলছি, ৩০-শে সেপ্টেম্বরের আগেই আপনারা এই ব্যবস্থার সদ্ব্যবহার করুন এবং ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পরের সম্ভাব্য অসুবিধা থেকে নিজেদের বাঁচান।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজকের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এই বিষয়টা নিয়ে আমি এই জন্য বলছি যে সম্প্রতি রাজস্ব-বিভাগের অর্থাৎ ইনকাম ট্যাক্স, কাস্টমস্‌, এক্সাইজ – এই সব দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে আমি দু-দিনের এক আলোচনা সভায় বিভিন্ন বিষয়ে মত বিনিময় করেছি এবং আমি তাঁদের স্পষ্ট করে বলেছি যে, সব নাগরিককে চোর বলে ধরে নেওয়া ঠিক হবে না। নাগরিকদের ওপর ভরসা রাখুন, বিশ্বাস করুন, ওঁদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলুন। যদি নাগরিকেরা নিয়মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে চান তাহলে তাঁদের উৎসাহ ও ভালোবাসা দিয়ে সঙ্গে করে এগিয়ে চলুন। বিশ্বাসের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা দরকার। আমাদের আচরণের মধ্যে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। করদাতাদের মধ্যে বিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। যখন আমি আগ্রহ সহকারে কথাগুলি বলেছিলাম, তখন লক্ষ্য করলাম যে আধিকারিকরাও এই রকমই ভাবছেন যে আজ দেশ যখন অগ্রগতির পথে চলেছে তখন সবাইকে যথাসম্ভব যোগদান করতে হবে। আধিকারিকদের সঙ্গে যখন মত বিনিময় করছিলাম তখন আমি একটি তথ্য জানতে পারি, যা আমি আপনাদের জানাতে চাই। আপনারা হয়ত বিশ্বাস করবেন না যে, একশ পঁচিশ কোটি দেশবাসীর মধ্যে মাত্র দেড়লক্ষ মানুষ এরকম আছেন, যাঁদের করযোগ্য আয় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা থেকে বেশি – এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। বড়ো বড়ো শহরে পঞ্চাশ লক্ষ টাকার বেশি করযোগ্য আয়ের লক্ষ লক্ষ মানুষ আছেন। এক কোটি – দু’কোটি টাকা মূল্যের বাংলো দেখে বোঝা যায় না, এঁরা কীভাবে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা সীমার করযোগ্য আয়ের মধ্যে পড়েন। তার মানে – কিছু অসংগতি আছে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন প্রয়োজন আর সেই পরিবর্তন আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের আগে করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আগে জনসাধারণকে কিছু সুযোগ দেওয়া দরকার। আমার প্রিয় ভাই-বোনেরা, অঘোষিত উপার্জন প্রকাশ করার এটা একটা সুবর্ণ সুযোগ। অন্য ভাবে বললে ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পর বিপদ থেকে মুক্তির সহজ রাস্তা। দেশের ভালোর জন্য দেশের গরীবদের কল্যাণের জন্য আপনাদের সকলকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি, আর আমি চাই না যে ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পর আপনাদের কোনো অসুবিধা হোক।

আমার প্রিয় দেশবাসী, এই দেশের সাধারণ মানুষ দেশের ভালোর জন্য কিছু করার সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। আমি যখন রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ছাড়ার জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন দেশের এককোটিরও অধিক পরিবার ভর্তুকি ছেড়ে দিয়েছেন। আমি বিশেষ করে যাঁদের কাছে অঘোষিত আয় আছে, তাঁদের জন্য একটি বিশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। কাল আমি যখন ‘স্মার্ট সিটি’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য পুনে গিয়েছিলাম, সেখানে শ্রী চন্দ্রকান্ত দামোদর কুলকার্ণি এবং ওঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম কারণ যাঁরা কর ফাঁকি দেন, তাঁরা হয়ত আমার কথায় উৎসাহিত নাও হতে পারেন, কিন্তু শ্রী চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণির কথায় উৎসাহিত হবেন। আপনারা কি জানেন কারণটা কী? এই চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণি একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। সরকারী চাকুরি করতেন। অবসর নিয়েছেন। উনি ১৬,০০০ টাকা পেনশন পান। আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা শুনে আশ্চর্যান্বিত হবেন আর যাঁরা কর ফাঁকিতে অভ্যস্ত, তাঁরাও বড়োই আঘাত পাবেন যে, শ্রী চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণি – যিনি মাত্র ১৬,০০০ টাকা পেনশন পান, তিনিই কিছুদিন আগে আমাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে প্রতি মাসের পেনশন থেকে ৫,০০০ টাকা করে ‘স্বচ্ছতা অভিযান’-এর জন্য দান করতে চান। শুধু তাই নয়, উনি আমাকে ৫২টি পোস্ট-ডেটেড চেক পাঠিয়ে দিয়েছেন। যে দেশে একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী ১৬,০০০ টাকা পেনশন থেকে ৫,০০০ টাকা ‘স্বচ্ছতা অভিযান’-এর জন্য দেন, সেই দেশে কর ফাঁকি দেওয়ার কোনও অধিকার আমাদের নেই। শ্রী চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণির থেকে বড়ো উদাহরণ আমাদের সামনে থাকতে পারে না। আমি চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণিকে ডেকেছিলাম, তাঁর সঙ্গে মিলিত হয়েছি। ওঁর জীবন-দর্শন আমার মনে দাগ কেটেছে। আমি এই পরিবারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আরও হয়ত এরকম অসংখ্য মানুষ আছেন, হয়তো আমি তাঁদের সম্পর্কে অবগত নই। কিন্তু এঁরাই হচ্ছেন দেশের আসল শক্তি। ১৬,০০০ টাকা পেনসন পান এমন ব্যক্তি ২,৬০,০০০ টাকার অ্যাডভান্স চেক আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এটা কি কোনো একটা ছোটো বিষয় হতে পারে? আসুন, আমরা সবাই মন থেকে সব দ্বিধা কাটিয়ে ফেলি, সবাই ভাবি সরকার আমাদের উপার্জন ঘোষণা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। চন্দ্রকান্ত বাবুর কথা স্মরণ করে আমরাও এর সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করি।

আমার প্রিয় দেশবাসী, উত্তরাখণ্ডের পৌড়ী গাড়োয়াল থেকে শ্রী সন্তোষ নেগি ফোনে নিজের এক অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। জল সঞ্চয় বিষয়ে তিনি আমাকে একটি খবর দিয়েছেন। তার এই অভিজ্ঞতা আমার মনে হয় দেশবাসীর কাজে আসবে। ‘আপনার উৎসাহে আমি আমাদের বিদ্যালয়ে বর্ষা শুরু হওয়ার আগে খেলার মাঠের চার পাশে চার ফুটের ছোটো ছোটো ২৫০টি গর্ত বানিয়ে দিয়েছিলাম যাতে সেই জল জমা হয়। এই প্রক্রিয়ায় খেলার মাঠের কোনো ক্ষতি হয়নি। বাচ্চাদেরও ডুবে যাওয়ার কোনো ভয় ছিল না। আর কোটি লিটার বর্ষার জল সঞ্চয় করা সম্ভব হয়েছে।’

সন্তোষ বাবু, আমি আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনি আমাকে এই খবর জানিয়েছেন। পৌড়ী গাড়োয়ালের মত একটি পাহাড়ি ক্ষেত্রে আপনি এধরনের কাজ করেছেন। আপনি ধন্যবাদের যোগ্য। আমার বিশ্বাস দেশবাসী বৃষ্টির আনন্দ উপভোগ করুন। এটি ঈশ্বরের দেওয়া প্রসাদ – অনন্ত সম্পত্তি। প্রতিটি ফোঁটা জল সংরক্ষণের জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। গ্রামের জল গ্রামে, শহরের জল শহরে কীভাবে আটকে রাখব? ধরিত্রী মাতাকে পুনরায় রি-চার্জ করার জন্য আমরা আবার ঐ জলকে কীভাবে মাটির মধ্যে ফেরত পাঠাব? জল আছে বলেই ভবিষ্যৎ আছে, জলই তো জীবন। সারা দেশে একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রতিটি রাজ্য জল সঞ্চয় নিয়ে অনেক প্রকল্প তৈরি করেছে। এখন বৃষ্টি যখন এসেছে, তখন লক্ষ্য রাখুন – জল যেন নষ্ট না হয়। জীবন বাঁচানোর জন্য আমরা যতটা চিন্তিত, জল বাঁচানোর জন্য আমাদের ততটাই চিন্তিত থাকতে হবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা জানেন ১৯২২ নম্বর এখন তো আপনাদের মনে স্থান করে নিয়েছে। ১৯২২ – ১৯২২। এই ১৯২২ একটি এমন নম্বর, যাতে মিস্‌ড কল করে আপনি আপনার পছন্দের ভাষায় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আপনার সময় মত নিজের ভাষায় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুনে দেশের উন্নয়নে যোগদানে সচেষ্ট হন। সকল দেশবাসীকে অনেক অনেক নমস্কার। ধন্যবাদ!